নিজস্ব প্রতিবেদক

১৮ এপ্রিল, ২০২০ ০০:৩৯

ঝুঁকি নিয়েই কাজ চলছে সিলেটের ইটভাটাগুলোতে

করোনা ঝুঁকিতে শ্রমিকরা

করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে দেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। সিলেট জেলাকে লকডাউনও ঘোষণা করা হয়েছে। তবে এখনও কাজ চলছে সিলেটের ইটভাটাগুলো। এখন ইটভাটাগুলোতে চলছে ইট পুড়ানোর কাজ। ঝুঁকি নিয়েই এসব ভাটায় কাজ করছেন শ্রমিকরা।

সিলেট ইটভাটা মালিক সমিতি সূত্রে জানা যায়, সিলেট জেলায় শ' খানেক ইটভাটা রয়েছে। প্রায় সবকটিতে এখন কার্যক্রম চালু রয়েছে। কাজে নিয়োজিত আছেন শ্রমিকরা। বেশিরভাগ ভাটায়ই মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি। এতে ঝুঁকি আরও বাড়ছে।

ইট ভাটা মালিকদের সাথে আলাপ করে জানা যায়, প্রতিবছর অক্টোবর থেকে ইট ভাটায় ইট পুড়ানোর মৌসুম শুরু হয়। এপ্রিল পর্যন্ত চলে ইট পুড়ানো। ফলে এই কয়েকমাসই ইট ভাটার উৎপাদন মৌসুম। এ কারণে অন্যান্য সকল প্রতিষ্ঠানে ছুটি ঘোষণা করে শ্রমিকদের ছুটি দিয়ে দিলেও এখানকার শ্রমিকদের এখনও কাজ করতে হচ্ছে।

সিলেট ইটভাটা মালিক সমিতির সভাপতি দেলওয়ার হোসেন বলেন, এখন ইটভাটা বন্ধ দিলে আমাদের বিরাট অংকের লোকসান গুণতে হবে। এমননিতেই কয়লা সঙ্কটের কারণে এবার ইট পুড়ানো শুরু করতে দেরী হয়েছে। এখনও প্রতিটি ভাটায় অনেক কাঁচা ইট রয়েছে।

তিনি বলেন, আমরা বেশিরভাগ শ্রমিককেই ছুটি দিয়ে দিয়েছি। ২/৩ জন করে কেবল রয়েছেন। তারা ইটভাটার চুল্লির আগুন তদারকি করছেন।

বৃহস্পতিবার সিলেটের গোলাপগঞ্জের হিলালপুর এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, এখানকার পাশাপাশি দুটো ইটভাটায় ইট পুড়ানোর কাজ চলছে। কাজে নিয়োজিত আছেন শ্রমিকরা। ঘা ঘেঁষাঘেঁষি করেই কাজ করছেন তারা। নেই পর্যাপ্ত পানি ও সাবানের ব্যবস্থা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সিলেটের এক ইটভাটা মালিক বলেন, আমার এখনও ১০ লাখ কাঁচা ইট রয়েছে। ইতোমধ্যে বৃষ্টি শুরু হয়ে গেছে। দ্রুত এগুলো পুড়াতে না পারলে সব নষ্ট হয়ে যাবে। ফলে বিরাট অংকের লোকসান গুনতে হবে। একারণে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকির কথা জেনেও ইটভাটা বন্ধ করতে পারছি না। নিজেও নিয়মিত ভাটায় যাই। তাছাড়া বিভিন্ন জায়গায় নির্মাণ কাজ চলমান থাকায় এখন ইট বিক্রিও হচ্ছে।

তবে ইটভাটাগুলোতে স্বাস্থ্য বিধি মেনেই কাজ করানো হচ্ছে বলে জানান সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি আবু তাহের মো. শোয়েব। তিনি বলেন, ইট ভাটার চুল্লিতে একবার আগুন দিলে তা বন্ধ করা খুব কষ্ট। তাই ভাটা মালিকরা আগুন বন্ধ করতে পারছেন না। তবে তারা শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রেখেই উৎপাদন অব্যাহত রেখেছেন।

এ ব্যাপারে সিলেটের জেলা প্রশাসক কাজী এম. এমদাদুল ইসলাম বলেন, ইটভাটার শ্রমিকদের ছুটি দেওয়া হয়েছে বলে মালিকরা আমাকে জানিয়েছেন। কেবল ২/১জন করে লোক ভাটায় রয়েছেন। যারা ইট পুড়ানোর বিষয়টি তদারকি করছেন, এমনটিও জানিয়েছেন তারা।

জেলা প্রশাসক বলেন, তবে ইটভাটাগুলোতে যদি এখনও শ্রমিকরা কাজে নিয়োজিত থাকেন তবে সেটা অবশ্যই ঝুঁকিপূর্ণ। আমি এ ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে দেখবো।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত